বুয়েটের শেরে বাংলা হলের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সবার চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে র্যাগিংয়ের বর্বরতা। সতীর্থদের পাশবিকতার শিকার হয়ে প্রাণ খুইয়েছেন, বুয়েটের তড়িৎ প্রকৌশল বিভোগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ।
সন্তানকে সফল প্রকৌশলী বানাতে চেয়েছিলেন বাবা-মা। ভাগ্যের পরিহাসে নিথর দেহে ফিরেছে তাদের যক্ষের ধন। কান্না ভেজা চোখে প্রতীক্ষা এখন সুষ্ঠু বিচারের।
আবরার ফাহাদ হত্যার পরে কেটে গেছে একটি বছর। শিবির সন্দেহে তকমা লাগিয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা যেখানে তাকে বেধড়ক পিটিয়েছিল, শেরে বাংলা হলের সেই ২০১১ নম্বর কক্ষ এখন তালাবদ্ধ। এর ঠিক নিচেই ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন আবরার।
সতীর্থের নির্মম মৃত্যুতে ফুঁসে উঠেছিল বুয়েট। টানা দেড়মাসের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে নিষিদ্ধ করা হয় ছাত্র রাজনীতি। শিক্ষার্থীদের সব দাবিও মেনে নেয় কর্তৃপক্ষ। তবে বিচারিক প্রক্রিয়া নিয়ে কিছুটা অসন্তুষ্ট আন্দোলনকারীরা।
আবরার হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত ২৫ আসামির মধ্যে ২২ আসামি কারাগারে থাকলেও, এখনও ৩ জন অধরা। শিক্ষার্থীদের মতো উপাচার্যও চান, পলাতকদের যেন আইনের আওতায় আনা হয়।
সোমবার (৫ অক্টোবর) আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার মামলায় ২৫ আসামির বিরুদ্ধে করা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে।
২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান।
অভিযুক্ত ২৫ জনের মধ্যে এজাহারনামীয় ১৯ জন এবং তদন্তে প্রাপ্ত এজাহারবহির্ভূত ছয়জন রয়েছেন। এজাহারভুক্ত ১৯ জনের মধ্যে ১৬ জন এবং এজাহারবহির্ভূত ছয়জনের মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারদের মধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আটজন।
গ্রেপ্তার ২২ জন হলেন- মেহেদী হাসান রাসেল, মো. অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ সকাল, মো. মেহেদী হাসান রবিন, মো. মেফতাহুল ইসলাম জিওন, মুনতাসির আলম জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির, মো. মুজাহিদুর রহমান, মুহতাসিম ফুয়াদ, মো. মনিরুজ্জামান মনির, মো. আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুর রহমান, শামীম বিল্লাহ, মোয়াজ আবু হুরায়রা, এ এস এম নাজমুস সাদাত, ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, অমিত সাহা, মো. মিজানুর রহমান ওরফে মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত, মোর্শেদ অমত্য ইসলাম ও এস এম মাহমুদ সেতু। মামলার তিন আসামি এখনও পলাতক। তারা হলেন- মোর্শেদুজ্জামান জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মোস্তবা রাফিদ। তাদের মধ্যে প্রথম দুজন এজাহারভুক্ত ও শেষের জন এজাহারবহির্ভূত আসামি।
বিস্তারিত দেখুন ভিডিও লিংকে: