বইমেলাকে বলা হয় বাঙ্গালীর প্রাণের উৎসব। প্রতিবছর বইমেলায় নানা শ্রেণী পেশার মানুষের সমাগম ঘটে। এই মেলায় শুধু জ্ঞান পিপাসুরাই নয় আসেন সকল শ্রেণী পেশার মানুষ, আসেন শিশু, কিশের, যুবক,বৃদ্ধ সব বয়সের মানুষ। কিন্তু শারীরিক প্রতিবন্ধীরা! যারা পায়ে হাটতে পারেনা, কে ভাবে তাদের জন্য?।
হ্যাঁ, তাদের কথা চিন্তা করে গত ছয় বছর ধরে "সুইচ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন" বইমেলায় শারীরিক প্রতিবন্ধীদের পাশে রয়েছে। সংগঠনটির কর্মীরা হুইল চেয়ারে করে শারীরিক প্রতিবন্ধীদের ঘুরিয়ে দেখান বইমেলা এবং সেটা সম্পুর্ন বিনামূল্যে।
গত রোববার (২১ মার্চ) বিকাল থেকে সুইচ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবা শুরু হয়। তাদের এই সেবা দেওয়ার জন্য মেলার দুই প্রান্তে টিএসসি এবং দোয়েল চত্বরে ১০টি করে মোট ২০টি হুইলচেয়ার প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং আছেন ২৫ জন সেচ্ছাসেবক। সেচ্ছাসেবকদের মধ্যে রুপান্তরিত এক নারীও রয়েছে। এবারের মেলায় নতুন সংযুক্ত হয়েছে শিশুদের জন্য হুইলচেয়ার।
'সুইচ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের' প্রধান সমন্বয়ক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেল, সুইচ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনটি ছয় বছর ধরে মানবতার সেবায় কাজ করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় বইমেলা দেখতে আগ্রহী শরীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য এই সেবার উদ্যোগ নিয়েছি আমরা। হাঁটতে পারেনা এমন ব্যক্তিরা কোনভাবে মেলার গেট পর্যন্ত পৌছালে তাদের আর কোন চিন্তা নেই। আমাদের সেচ্ছাসেবকরা শারিরীক প্রতিবন্ধীর যতক্ষণ মন চায় ততক্ষণ মেলা ঘুরিয়ে দেখায়।
সংগঠনের একমাত্র রুপান্তরিত নারী সেচ্ছাসেবক শিমরান বলেন, বর্তমানে আমাদের মত রুপান্তরিত নারীদের সকলে খারাপ চোখে দেখে, সকলে মনে করে আমাদের দিয়ে কোন ভালো কাজ হয়না কিন্তু এই সংগঠনের মাধ্যমে আমার মত রুপান্তরিত নারীরাও মানুষের সেবায় এগিয়ে আসতে পারছে এবং আমাদের প্রতি মানুষের যে ঘৃণা, ভয় সেটা অনেকাংশে কমে যাচ্ছে।
২০১১ সাল থেকে বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজ করে আসছে সংগঠনটি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রৌকশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের সমন্বয়ে পরিচালিত হচ্ছে সংগঠন সুইচ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন। সংগঠনটির সাথে যুক্ত আছে প্রায় ২০০ সেচ্ছাসেবী।
এবার বইমেলায় এ পর্যন্ত ২৭ জন শারীরিক প্রতিবন্ধীকে সেবা প্রদান করেছে সংগঠনটি।