এক বছর আগে করোনার আকস্মিক হানায় স্তব্ধ হয়ে পড়ে চীন। লকডাউনের ফাঁদে আটকা পড়ে অর্থনীতি। ২০২০ সালের প্রথম প্রান্তিকে দেশটির অর্থনীতি সংকুচিত হয়, ৬ দশমিক আট শতাংশ। এর ধারাবাহিকতা ছিলো দ্বিতীয় প্রান্তিকেও।
এমন বিধ্বস্ত পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে অনেক সময় লাগতে পারে বলে পূর্বাভাস দেয় বিভিন্ন সংস্থা। কিন্তু সব পূর্বাভাসকে মিথ্যা প্রমাণিত করে তৃতীয় প্রান্তিকে বদলে যায় চীনের অর্থনীতি। সরকারের প্রণোদনাসহ নানা পদক্ষেপে জুলাই-সেপ্টেম্বর মেয়াদে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়, প্রায় ৫ শতাংশ। পরের প্রান্তিকেই যা ছাড়িয়ে যায় সাড়ে ৬ শতাংশ। চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো জানায়, প্রত্যাশিত প্রবৃদ্ধিকেও ছাড়িয়ে গেছে শেষ প্রান্তিকের অর্জন।
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনিং বলেন, দৃঢ় বিশ্বাস ছিলো, আমাদের অর্থনীতি শিগগির ঘুরে দাঁড়াবে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ক্রমাগত বাড়াতে করোনাকালেও বিভিন্ন দেশের সাথে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করেছে সরকার। একইসঙ্গে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে অন্যান্য দেশকে সহায়তাও দেয়া হয়েছে।
জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো কমিশনার নিং জিঝে বলেন, শেষ প্রান্তিকে অবিস্মরণীয় প্রবৃদ্ধি অর্জনে বেশ খুশি দেশের মানুষ। এই সফলতা সহজে আসেনি, মহামারির মধ্যে নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়েছে। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের ভিত্তি মজবুত করতে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। ফলে আমদানি-রপ্তানিও বাড়ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারের সহায়তা ও সব খাতের উৎপাদন স্বাভাবিক থাকলে অর্থনীতি দ্রুত প্রসারিত হবে।
জাতীয় উন্নয়ন ও সংস্কার কমিশনের প্রেসিডেন্ট ওয়াং চাংলিং বলেন, অর্থনীতি এখন বেশ ভারসাম্য ও গুছানো অবস্থায় রয়েছে। এই প্রবৃদ্ধি অর্জনের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে আবারও শক্তিশালী অবস্থানে ফিরে যেতে পারবে চীন।
বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাসে বলা হয়, চলতি বছরে চীনের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৭ দশমিক নয় শতাংশ। আর যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ইকনোমিকস অ্যান্ড বিজনেজ রিসার্চ- সিইবিআর বলছে, ২০২৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির নেতৃত্বে থাকবে এশিয়ার এই দেশ।