অ-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান উত্তরা ফাইন্যান্স। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটিতে ব্যাপক হরিলুটের তথ্য পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শকরা।
পরিদর্শনে দেখা গেছে, উত্তরা মটরস ও উত্তরা গ্রুপের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ঋণের নামে উত্তরা ফাইন্যান্স থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন ৩৩৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। পরিদর্শন প্রতিবেদনে বলা হয়, ১১৮টি অনুমোদন বিহীন উত্তোলনের মাধ্যমে উত্তরা মটরর্স লি ও উত্তরা গ্রুপের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের নামে শর্ট টার্ম লোন রিপেমেন্ট এবং লং টার্ম লোন দেখিয়ে এ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
লুটপাটে পিছিয়ে নেই পর্ষদ চেয়ারম্যান, পরিচালক এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালকও। প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান রাশেদুল হাসানকে প্রাপ্যতা বহির্ভূত বিভিন্ন খাতে ৭৯৯ কোটি ৩৬ লাখ টাকা দেয়ার প্রমাণ পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিধিবহির্ভূতভাবে ব্যবস্থাপনা পরিচালকও নিয়েছে ২৪ কোটি ২২ লাখ টাকা। আর এক পরিচালক মুজিবুর রহমানের কাছ থেকে ২৩৬ কোটি টাকার আমানত সংগ্রহ দেখানো হলেও তা প্রতিষ্ঠানটির হিসাবে জমা হওয়ার কোন প্রমাণ দেখাতে পরেনি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এতসব অনিয়মের পরও তেমন কিছুই ঘটেনি বলে জানান ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম শামসুল আরেফিন।
প্রতিষ্ঠান গেল দুই বছরের আর্থিক বিবরণীতে ব্যাপক ভুজভাজি পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শকরা। তদন্তে দেখা যায়, সহযোগী প্রতিষ্ঠান উত্তরা ফাইন্যান্স এন্ড ক্যাপিট্যাল ম্যানেজমেন্টকে ২৪৮ কোটি টাকা ঋণ দেয়া হলেও শেয়ারে বিনিয়োগের তথ্য নেই। এই খাতের বাকি ৩৫০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ছাড় করা হয়েছে। এমনকি, অগ্রীম ও শেয়ারে ১২০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ করা হলেও আর্থিক বিররণীতে উল্লেখ আছে ৩১১ কোটি টাকা। সে হিসেবে বিনিয়োগের হদিস নেই ৮৯০ কোটি টাকার।
বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘদিনের এসব অনিয়ম ধরা পড়েনি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মনিটরিং দুর্বলতার কারণেই।
আর একাউন্টিং জাগলারি বা হিসাব ভুজভাজির প্রমাণ পাওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির সব হিসাব ফরেনসিক অডিটের পরামর্শ দিলেন আইসিএবির সাবেক সহসভাপতি সাব্বির আহমেদ।
সব মিলিয়ে আরো একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের আমানত ফেরত না পাওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন বিশ্লেষকরা।