১৮ জানুয়ারি শুরু হয়েছিলো ১৩ দলের লিগ। সাত মাসের উত্থান-পতন শেষে পর্দা নামলো বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলের ১১তম আসরের।
লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বসুন্ধরা কিংস। পুরোটা আসর জুড়ে শীর্ষে ছিলো নবাগত ক্লাবটি। এবারের আসর জুরে ছিল জমজমাট প্রতিদ্বন্দ্বিতা। আর তাই দর্শকের আগ্রহ ছিলো লিগকে ঘিরে।
গোলদাতার তালিকায় যথারীতি বিদেশিদের দাপট। সেরা দশে আটজনই বিদেশি। শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের রাফায়েল ওদোভিন ২২ গোল করে সবার উপরে। দুই গোল কম সানডে চিজোবার। সেরা আক্রমনভাগ নিয়েও সেরা চারে নেই বসুন্ধরার কোনো স্ট্রাইকার। না থাকার মূলে তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা। সেরা দশে যে তিনজনই কিংসদের। মার্কোস ভিনিসিয়াস, মতিন মিয়া ও দানিয়েল কলিন্দ্রেসরা মিলে করেছেন ৩৬ গোল। প্রায় পুরো লিগেই তিন বিদেশি নিয়ে খেলেছে চ্যাম্পিয়নরা।
সবাইকে চমকে দিয়েছেন আবাহনীর নাবীব নেওয়াজ জীবন। ১৭ গোল করে সেরা তিনে জায়গা করে নিয়েছেন। মতিন মিয়াও কম যাননি। সাইফের উপেক্ষার জবাব দিয়েছেন বসুন্ধরার সুপার সাব হয়ে। ১১ গোল করে চ্যাম্পিয়নদের সাফল্যের অন্যতম কারিগর ছিলেন। মান্নাফ রাব্বি, জাহিদ হোসেন, আরিফুর, তকলিচরাও গোল পেয়েছেন।
লিগে গোলও বেড়েছে গতবারের তুলনায়। ৪২৯ গোলের এক তৃতীয়াংশ করেছেন দেশিয়রা। আর বাকিটা বিদেশিদের। প্রথম লেগে যেখানে গোল হয়েছিলো ১৬৩টি। দ্বিতীয় লেগে তা প্রায় দ্বিগুন হয়েছে। ম্যাচ প্রতি গড়ে পৌনে তিনটি করে গোল হয়েছে।
সবচেয়ে বেশি ৬০ গোল করেছে আবাহনী। তবে গোলরক্ষকের ভুলে গোল বেশি খাওয়ায় অনেক ম্যাচেই ভুগতে হয়েছে আকাশী-নীলদের। সেই তুলনায় আনিসুর রহমান জিকো বসুন্ধরার ট্রাম কার্ড ছিলেন। দলের দু নম্বর গোলরক্ষক থেকে হয়ে উঠেছিলেন গোলবারের অতন্দ্র প্রহরী। ১৪ গোল হজম করেছে কিংসরা।
শীর্ষে যেমন, নিচের প্রতিদ্বন্দ্বিতাটা তারচেয়ে বেশি হয়েছে। ২০ পয়েন্ট নিয়েও প্রিমিয়ার লিগ থেকে নেমে যেতে হয়েছে নোফেল স্পোর্টিং ক্লাবকে। এটাও ইতিহাস। মাত্র এক পয়েন্ট বেশি নিয়ে বেঁচে গেছে ব্রাদার্স ইউনিয়ন। বিজেএমসি আবারো নেমে গেছে চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে।
লিগের ১৫৬ ম্যাচে সাড়ে চার শতাধিক হলুদ কার্ড আর লাল কার্ড হয়েছে ১৩টি। সবচেয়ে বেশি চার লাল কার্ড দেখেছে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব। ব্যক্তিগত সবচেয়ে বেশি দুইবার লাল কার্ড দেখেছেন ক্লাবটির আসাদুজ্জামান বাবলু।
ছয় ভেন্যুর এই লিগ নতুন অভিজ্ঞতা দিয়েছে ক্লাব, সংগঠক, ফুটবলার, আয়োজক বাফুফেকে। তবে প্রতিবার নিয়ম আর ফরম্যাট বদলানো লিগ আগামীতে কি নিয়ে অপেক্ষা করছে?