মজার ব্যাপার হলো এশিয়া কাপের ফাইনালে কখনই দেখা হয়নি দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-পাকিস্তানের। ১৯৮৪ থেকে ২০১৬ , তেরো আসরে কত পরিসংখ্যান, ঘটনা প্রবাহ আর হাসি-কান্নার স্বাক্ষী এশিয়া কাপ ক্রিকেট। এটাও সত্য এশিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের আসর হালের বাস্তবতায় বড্ড মিস করে ওয়াসিম-ওয়াকার-শোয়েবদের পেস, মুরালিধরণের ঘূর্ণি জাদু আর শচীন-দ্রাবিরদের ব্যাটিং ক্লাস।
এশিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের আসরে ভারত-শ্রীলঙ্কার আধিপত্য অবিসংবাদিত। ১৩ আসরের ১১টায় চ্যাম্পিয়ন দুদল। ৮৪ থেকে ২০১৬, আটবার ফাইনালে দেখা হয়েছে দুদলের। ২০১০ পর্যন্ত প্রতিবারই ফাইনালে খেলেছে লঙ্কানরা। তবে ক্রিকেট রোমান্টিকদের আক্ষেপ হতে পারে ফাইনালে কখনই দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তান-ভারতের দেখা না হওয়া। ৬ বার শ্রেষ্ঠত্ব ভারতের, পাচবার শ্রীলঙ্কার আর পাকিস্তান এশিয়া কাপ ঘরে তুলেছে ২০০০ আর ২০১২ সালে দুবার।
৫২ ম্যাচ খেলে এশিয়া কাপে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা দল শ্রীলঙ্কা। ভারত ৪৮ আর পাকিস্তান খেলেছে ৪৪ ম্যাচ। দুবার ফাইনাল খেলেও শিরোপার স্বাদ না পাওয়া বাংলাদেশ খেলেছে ৪২ ম্যাচ। যেখানে জয়ের চেয়ে পরাজয় পাচগুণ বেশি।
শ্রেষ্ঠত্বের সংখ্যায় নামের সুবিচার করতে না পারলেও সর্বোচ্চ স্কোরটা পাকিস্তানের। সেদিন ছিল শহীদ আফ্রিদির ঝরের দিন। ৬০ বলে ১২৪ রানের ইনিংসে বাংলাদেশকে পুড়িয়েছিলেন পাকিস্তান অধিনায়ক। স্কোর বোর্ডে উঠেছিল ৭ উইকেটে ৩৮৫। এরপরই ভারতের দলীয় ৩৭৪ রানের অবস্থান। বাংলাদেশের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কা করেছিঁল আসরের তৃতীয় সর্বোচ্চ ৯ উইকেটে ৩৫৭। মজার ব্যাপার হলো শীর্ষ পাচ দলীয় স্কোরের তিনটিই বাংলাদেশের বিপক্ষে।
মাতারা হারিকেন। এশিয়া কাপকে মাতিয়েছেন আপন রঙে ঢঙে। ২৪ ইনিংসে করেছেন এক হাজার দুশো বিশ রান। শুধু রান নয়, সবচেয়ে বেশি ৬ সেঞ্চুরিও এসেছে লঙ্কান গ্রেটের উইলো থেকে। এরপরই তার স্বদেশী কুমার সাঙ্গাকারা। ২৩ ইনিংসে করেছেন ১০৭৫ রান। তিনে থাকা গ্রেট টেন্ডুলকারের রান সংখ্যা ৯৭১। ব্যাটিংয়ের মতো বল হাতেও আধিপত্ত শ্রীলঙ্কানদের। ৩০ উইকেট নিয়ে শীর্ষে মুরালিধরণ এরপর বিষ্ময় বোলার অজন্তা মেন্ডিস, ৮ ইনিংসে ২৬ উইকেট তার। তিনে পাক স্পিনার সাঈদ আজমল। এ তালিকার শীর্ষ পাচে নেই কোনো ভারতীয় বোলার।
আরব আমিরাত উত্তর দেবে নতুন এশিয়ান ক্রিকেট শ্রেষ্ঠত্ব কার হবে। তৃতীয় বার আসর বসছে মরুর দেশে। কখনও শিরোপা জিততে না পারলেও পাচবার আয়োজনে সবার ওপরে ক্রিকেট আবেগের দেশ বাংলাদেশ। এশিয়া কাপের হ্যাটট্রিক আয়োজক বটে। এরপরই চার বারের আয়োজক শ্রীলঙ্কার অবস্থান। বিবর্তনের সাথে ক্রিকেটে যেমন বিবর্তনের ছোয়া এশিয়া কাপেও তাই। কোন ফরম্যাটে হবে এশিয়াকাপ নির্ধারিত হয় তার পরে ওয়ানডে বিশ্বকাপ নাকি বিশ্ব টিটোয়েন্টি।