জানা যায়, ওই শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাতের সময় যৌন হয়রানিও করা হয়।
এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থীর বাবা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ওই শিক্ষার্থী রাঙামাটি শহরের একটি বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে।
ওই শিক্ষার্থীর মা জানান, আমার মেয়ে বাসায় এসে জানায়, ইংরেজির শিক্ষক তাকে অশালীনভাবে পিটিয়েছে। পেটানোর সময় শিক্ষক বলেছে, স্কুলে তুই থাকবি, না হয় আমি থাকবো।' পরে বিষয়টি সহকারী প্রধান শিক্ষককে জানালে তিনিও উল্টো আমার মেয়েকেই দোষারোপ করেছেন। তখন আরেক শিক্ষিকা ও স্কুলের আয়াও আশালীন বলেছেন। এ ঘটনায় ন্যায়বিচার না পাওয়ায় মেয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। একপর্যায়ে স্কুলের ছাদে গিয়ে আত্মহত্যা করতে লাফ দেয়। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। আমার মেয়ে হাসপাতালে সারা দিন কান্নাকাটি করছে।
এক সহপাঠী জানায়, ‘স্যার যে পড়া দিয়েছিলেন সেটি অনেকে পারেনি। সেদিন স্যার অনেককে মেরেছেন। আমাদের দুজনকে ড্রেস ধরে মেরেছেন। পরে তাকে নিয়ে আমি তাদের বাসায় চলে আসি। ওর মাকে বিষয়টি বলি। যখন বিচার পায়নি তখন সে বলে আত্মহত্যা করবে। সে এই অপমান সইতে পারছিল না। কখন যে স্কুলের ছাদে চলে গেলো আমি দেখিনি। পরে চিৎকার শুনে নিচে গিয়ে দেখি আমার বান্ধবী।
ওই শিক্ষার্থী ছাদ থেকে লাফ দেওয়ার পর তার বক্তব্য ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। সেখানে তাকে বলতে শোনা যায়, 'স্যারে বলেছে, এমন জয়গায় মারবো কাউকে দেখাতে পারবি না।'
ছাদ থেকে লাফ দেওয়ার পর তাকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে পাঠায় এলাকাবাসী। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, আমি দোকানে ছিলাম। চিৎকার শুনে দেখি একটি মেয়ে মাটিতে পড়ে আছে। তখন আমার স্ত্রীকে বাসা থেকে ডেকে তার মাথায় পানি দিয়ে কিছুটা সুস্থ করে তুলি। এরপর হাসপাতালে পাঠাই। সে পায়ে ও কোমরে আঘাত পেয়েছে।
সহকারী প্রধান শিক্ষক জিল্লুর রহমান বলেন, তাকে মারধর করা উচিত হয়নি। আমরা স্কুলে বেতও রাখি না। হাইকোর্ট থেকে এই বিষয়ে কঠোর নির্দেশের কথা বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় দেখেছি। তিনি আরও বলেন, ঘটনার দিন মেয়েটির ভাই আমার বিদ্যালয়ের ওই শিক্ষককেও মেরেছে। তিনি এখন চট্টগ্রামে একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
পুলিশ জানায়, শিক্ষার্থীকে মারধরের একটি অভিযোগ পেয়েছি। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা শিশুর প্রতি নিষ্ঠুরভাবে আঘাত, আত্মহত্যার প্ররোচনা আইনে মামলা নিয়েছি।